মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেন কুয়েতের মনোনীত রাষ্ট্রদূত আলী তুনিয়ান আবদুল ওয়াহাবহামাদাহ। ছবি: সংগৃহীত
আরিফ খান শুভ
বিশেষ প্রতিনিধি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কুয়েত সরকারকে বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ ও আধা–দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের আহ্বানজানিয়েছেন।আজ মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে ঢাকায় তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতের মনোনীতরাষ্ট্রদূত আলী তুনিয়ান আবদুল ওয়াহাব হামাদাহ তাঁর পরিচয়পত্র পেশ করার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
কুয়েতে সাড়ে তিন লাখেরও অধিক বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন উল্লেখ করে, রাষ্ট্রপ্রধান সেবিকা (নার্স) এবং কারিগরিকর্মীসহ দক্ষ ও পেশাদার কর্মী নিয়োগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. সারওয়ার আলম বাসসকেজানান, কুয়েতের ক্রমবর্ধমান দক্ষ জনশক্তির চাহিদা মেটাতে তিনি ২০২৩ সালে নার্স ও কারিগরি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্তএকটি সমঝোতা স্মারকের কথাও উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, জাহাজ নির্মাণ, জ্বালানি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ওষুধ শিল্পসহ অন্যান্য কিছুখাতে সুযোগ অন্বেষণের জন্য বাংলাদেশে কুয়েতের বিনিয়োগকারীদেরকে আরও বিনিয়োগেরও কথা বলেন।জবালানি ওউন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে, তিনি অপরিশোধিত তেল এবং পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য বাংলাদেশের জরুরিপ্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে চাহিদাগুলো পূরণে কুয়েতের সমর্থন চান।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে কুয়েতের নীতিগত অবস্থান এবং ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারেরনাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে মানবিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।তিনিরোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘ ও ওআইসিসহ দ্বিপাক্ষিকএবং বহুপাক্ষিক ফোরামে কুয়েতের অব্যাহত সমর্থন চেয়েছেন।
জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে, তিনি বাংলাদেশের অবিলম্বে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্যের প্রয়োজনীয়তার ওপরজোর দেন এবং সাশ্রয়ী মূল্যে এই চাহিদা পূরণে কুয়েতের সহায়তা প্রদানের জন্য ও অনুরোধ করেন।উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়কুয়েতের স্বাধীনতায় বাংলাদেশের ভূমিকাকে দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের প্রমাণস্বরূপ।
রাষ্ট্রপতি কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োজিত বাংলাদেশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন এবং এইঅংশীদারিত্ব সম্প্রসারণেরও ইচ্ছা প্রকাশ করেন।কুয়েতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার উল্লেখ করেতিনি দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও জোরদার করার ইচ্ছা পোষণ করেন রাষ্ট্রপ্রধান।
কুয়েতের মহামান্য আমির শেখ মিশাল আল–আহমাদ আল–জাবের আল–সাবাহকে তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ।কুয়েতে কর্মরত বাংলাদেশিদের কর্মঠ, পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ উল্লেখ করেনতুন রাষ্ট্রদূত কুয়েতে বাংলাদেশি জনশক্তির অবদানের প্রশংসা করেন।
কুয়েত রাষ্ট্রদূত ঢাকায় তার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা কামনা করেন।এসময় পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী ও প্রেস সচিবমো. সারওয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।এর আগে রাষ্ট্রাচারের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর)-এরএকটি চৌকস অশ্বারোহী দল রাষ্ট্রদূতকে ‘গার্ড অব অনার‘ প্রদান করে।