বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল– বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকশেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে তাৎক্ষণিক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান। ছবি : সংগৃহীত
নুর ইসলাম নিরব
স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল– বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অতি দ্রুত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদনির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।তিনি বলেন, ‘আমরা (বিএনপি) আশা করি, সকল দলের মতামতের ভিত্তিতেঅতি দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ঐকমত্য সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে খুব শিগগিরই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনঅনুষ্ঠিত হবে–এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি (অলি), নাগরিক ঐক্য ও এবি পার্টিসহ ২৬টি রাজনৈতক দলের প্রতিনিধিদের সৌহার্দ্যপূর্ণপরিবেশে বৈঠক হয়েছে। এই বেঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নিজ–নিজ অবস্থান থেকে কথা বলেছেন এবং স্ব–স্বদলের নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজধানীর বেইলি রোডস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে শনিবার বিকেল ৩টা থেকেসন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে চূড়ান্তভাবে গঠনমূলক ও ইতিবাচক কোনো আলোচনাহয়নি।
কারণ, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে এটি ছিল প্রথম বৈঠক। তাই, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্তভাবে বলার কোনোসুযোগও ছিল না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে তাৎক্ষণিক একপ্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান।তিনি বলেন, ‘আজকে প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে নিয়ে রাজনৈতিকদলগুলোর সঙ্গে প্রথম বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।
সভায় রাজনৈতিক দলগুলোকে তিনি জানিয়েছেন, বিভিন্ন সংস্কার কমিশন যে রিপোর্টগুলো প্রদান করেছে, তার প্রত্যেকটাবিষয়ে আলাপ–আলোচনা হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে এই কমিশন আরো বিস্তারিতআলোচনা করে সর্বোচ্চ মতামতের ভিত্তিতে একটা ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে। সেটাই হচ্ছে আজকের বৈঠকের মূলকথা।
আগে জাতীয় নির্বাচন, না স্থানীয় সরকার নির্বাচন এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবেবলেছি যে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার আগে হতে হবে। তারপরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে।’অপর এক প্রশ্নের জবাবেবিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে শুধু প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। বলা যেতে পারে এ আলোচনা ছিলো পরিচিতিমূলক।
মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বাধীন বিএনপির ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন– ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনআহমেদ।
এছাড়া, বৈঠকে মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বেজামায়াতে ইসলামী, অলি আহমেদের নেতৃত্বে এলডিপি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে নাগরিক ঐক্য, এসএম আলতাফহোসেন ও সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে গণফোরাম, জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে গণসংহতি আন্দোলন, সাইফুল হকের নেতৃত্বেবিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, মাওলনা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর নেতৃত্বে ইসলামী আন্দোলন, মাওলানা আবদুলবাছিদ আজাদ ও আহমেদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে খেলাফতে মজলিশ, নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গণঅধিকারপরিষদ, খন্দকার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে জাগপা, ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে এনপিপি, আন্দালিব রহমান পার্থেরনেতৃত্বে বিজেপি, নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
বৈঠকে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের জাতীয় নাগরিক কমিটির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশনেন। এদের মধ্যে ছিলেন, নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, আখতার হোসেন, সামান্তা শারমিন, সারজিস আলম।গত ১২ ফেব্রুয়ারিপ্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সাত সদস্যের ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করা হয়। এটি ছিল কমিশনের প্রথম বৈঠক।