নুর ইসলাম নিরব
স্টাফ রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জে তালাবদ্ধ ঘরের ভেতর থেকে যুবক হাবিবুর রহমানের বিকৃত লাশ উদ্ধারের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক নারীসহ অপহরণকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী ) রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানচালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ। ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে হাবিবুরকে হত্যা করেঅপহরণকারীরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন–
১.পটুয়াখালীর সদর থানার মাদারবুনিয়ার মো. ইউসুফ আকনের পুত্র কবির ওরফে সগির হোসেন (৩৮)
২.মুন্সীগঞ্জের সদর থানার হাতিমারার মজিদ আলী সৈয়ালের মেয়ে রেহেনা বেগম (২৫)
৩.নারায়ণগঞ্জের বন্দরের চর ইসলামপুরের আসমত আলীর পুত্র আরিফ (২৫)
৪.মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের দানেছপুর এলাকার মৃত জলিল মিয়ার পুত্র সিদ্দিক (৫২) ও
৫.পটুয়াখালীর সদর থানার হাজীখালা গ্রামের আব্দুল সাত্তার পেয়াদার পুত্র নুরুজ্জামান (৩৫)।
জানা যায়, গত ২৯শে জানুয়ারি দুপুরে ফতুল্লার পঞ্চবটি শীষমহল আমতলা এলাকার স্বপন সরকারের ভাড়াটিয়া বাসাথেকে এক ব্যক্তির বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন রাতেই নিহত আজিজুল হক উদ্ধারকৃত লাশটি তার ছেলেহাবিবুর রহমানের (২১) বলে শনাক্ত করেন এবং ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এর আগে ২৫শে জানুয়ারিতিনি ফতুল্লা থানায় ছেলে নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন ২৪শে জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে হাবিবুর দাপা পোস্ট অফিস রোডস্থ ভাড়া বাসা থেকে বের হয়।পরে রাত দশটার দিকে তার ফোনে কল করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অন্যথায় তার ছেলেকে হত্যা করা হবে।পুলিশ জানায়, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার রাতে প্রথমে মুন্সীগঞ্জের হাতিমারা থেকে কবির ওরফে সগির হোসেন ও তারস্ত্রী রেহেনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্যমতে, ঢাকারপোস্তগোলা থেকে সিদ্দিক এবং সিদ্দিকের তথ্যমতে, ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর থেকে নিহতের সহযোগী নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তারকরা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সকলেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশের নিকট স্বীকার করে।এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক–সার্কেল) মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃত দম্পত্তি কবিরওরফে সগির হোসেন ও রেহেনা বেগম বিভিন্ন স্থানে ঘরভাড়া নিয়ে মোবাইল ফোনে যুবক–পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক করে বাসায়ডেকে এনে মুক্তিপণ আদায় করতো।
এরই ধারাবাহিকতায় নিহত হাবিবুরের সহযোগী এবং গ্রেপ্তারকৃত কবির ওরফে সগিরের চাচাতো ভাই নুরুজ্জামানের মাধ্যমেনিহতের সঙ্গে মোবাইল ফোনে শারীরিক মেলামেশার প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে আনে রেহানা বেগম। পরবর্তীতেমুক্তিপণ আদায়ে নিহতের পরিবারের নিকট অর্থ দাবি করে হাবিবুরকে নির্যাতন করে। হাবিবুর চিৎকার করলে অপরআসামিদের সহায়তায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরের ভেতর লাশ ফেলে তালাবদ্ধ করে তারা সকলে পালিয়ে যায়।