দ্য স্টার নিউজ ডেস্ক ,
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে বাসায় কাজের বুয়া হিসেবে চাকরি নিয়ে খাবারে চেতনানাশক ঔষধমিশিয়ে খাইয়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ চুরির দুর্ধর্ষ ঘটনায় নগদ অর্থ ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধারসহ চোরকে গ্রেফতারকরেছে ডিএমপির ধানমন্ডি থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতের নাম রোখসানা ওরফে মোছা. শেফালী বেগম (৪৫)। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত হতে নগদ তিন লক্ষ৪৩ হাজার টাকা, নয়টি মোবাইল ফোন, একটি গলার মুক্তার হার, একটি ভ্যানিটি ব্যাগ ও ব্যাগে রক্ষিত চেতনা নাশকট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি ) রাত ৯:০০ ঘটিকায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে রোখসানা ওরফেশেফালী বেগমকে গ্রেফতার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা যায়, জনৈক কামরুন নাহার চৌধুরী রিতাধানমন্ডি এলাকার ৫/এ নং রোডের ৫৯ নং বাসার একটি ফ্ল্যাটে স্বামী ও সন্তানসহ বাস করেন। বাসায় কাজের বুয়া নাথাকায় তিনি উক্ত বাসার সিকিউরিটি গার্ডকে তার পরিচিত কোন কাজের বুয়া থাকলে দিতে বলেন।
সিকিউরিটি গার্ড শহিদুর রহমান গত (১৭ জানুয়ারি) রোখসানা ওরফে শেফালী বেগমকে কাজের জন্য উক্ত বাসায় নিয়েআসে। রোখসানা ওরফে শেফালী বেগম গত (১৮ জানুয়ারি) উক্ত বাসায় কাজে যোগ দেয় এবং বাসার দুপুরের রান্না করে।ঐদিন দুপুর ৩:০০ঘটিকার দিকে কামরুন নাহার কেনাকাটার জন্য মার্কেটে যায়। সেই সুযোগে কাজের বুয়া বাসায় থাকাকামরুন নাহার চৌধুরীর স্বামী ও ছেলেকে দুপুরের রান্না করা খাবারের সাথে কৌশলে চেতনা নাশক ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায়।
সেই খাবার খেয়ে তার স্বামী ও ছেলে ঘুমিয়ে পড়লে সেই সুযোগে কাজের বুয়া রোখসানা ওরফে শেফালী বেগম বাসারআলমারি ভেঙ্গে নগদ ৬০ হাজার টাকা, ছয়টি স্বর্ণের চুরি, দুটি স্বর্ণের চেইন, একটি কানের দুল, একটি স্বর্ণের লকেট, তিনটিডায়মন্ডের আংটি, দুটি ডায়মন্ডের কানের রিং ও স্বর্ণের কানের সেটসহ সর্বমোট ৩০ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মূল্যের মালামালচুরি করে বিকেল আনুমানিক ৪:২০ঘটিকার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
এ সংক্রান্তে কামরুন নাহার চৌধুরী রিতা বাদী হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে ধানমন্ডি থানায় একটি চুরির মামলাদায়ের করেন।থানা সূত্র আরও জানায়, মামলা রজুর পর রোখসানাকে কাজের জন্য নিয়ে আসা বাসার সিকিউরিটি গার্ডশহিদুর রহমানকে গত ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শহিদুর রহমানের দেওয়া তথ্য, বাসা ওআশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তির সহায়তায় রোকসানা তথা মোছা. শেফালী বেগমকে শনাক্ত করেগাজীপুর জেলার টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় রোকসানার প্রকৃত নাম মোছা. শেফালী বেগম। কাজের জন্য রোখসানানামের যে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সে দেখাতো সেটি ভুয়া। পরিচয়পত্রটি সে একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে তৈরিকরে প্রিন্ট করেছিল। বিভিন্ন বাসায় কাজে যোগ দেওয়ার সময় সে এই পরিচয়পত্রটি দেখাতো। এভাবে বুয়া হিসেবে বিভিন্নবাসায় কাজ নিয়ে কৌশলে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যেতো।উল্লেখ্য, সে কাজের বুয়াহিসেবে বিভিন্ন বাসায় কাজ নিয়ে চুরি করে টঙ্গী এলাকায় বিলাসী জীবন যাপন করে। টঙ্গীতে “স্বপ্নবিলাস” নামে তার একটিসমবায় সমিতি রয়েছে।গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।