মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী ) ডিসি সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছবি : সংগৃহীত
দিপা আক্তার
বিশেষ প্রতিনিধি
সারাদেশে শিল্প–সাহিত্য বন্ধ হয়ে গেছে, এ ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়কউপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী । মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী ) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলাপ্রশাসক সম্মেলনের কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রচুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। ফলে, শিল্প–সাহিত্য বন্ধ হয়ে গেছে। এ ধরনের প্রোপাগান্ডাছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, এটা ঠিক নয়। গত ১৫ বছর যে পরিমাণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে, এখন তার চেয়ে আরো বেশিঅনুষ্ঠান হচ্ছে।সবাইকে একটি ইনক্লুসিভ এবং কালচারালি অ্যাকটিভ বাংলাদেশ গড়তে কাজ করতে হবে–এ কথা উল্লেখকরে তিনি বলেন, আজকের ডিসি সম্মেলনে, কোথায় কোথায় আমাদের সীমাবদ্ধতা ছিল, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।সামনের দিনগুলোতে আমাদের মন্ত্রণালয় সবাইকে নিয়ে কি ধরনের কাজ করবো তা নিয়েও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, কোন কোন জায়গায় বাউল অনুষ্ঠানসহ নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না– আবার অস্বীকারকরছি না যে, কোথাও এমনটা ঘটেনি? নিশ্চয়ই এমনটা ঘটেছে। তবে অনেক জায়গায় সফলভাবে অনুষ্ঠানও হচ্ছে।যেখানেই সমস্যা, হচ্ছে সেখানেই আমরা আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানের চেষ্টা করছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, নাট্য উৎসব নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, এর সঙ্গে সরকারের কোনোসম্পৃক্ততা নেই। এটার পেছনে নাট্যকর্মীদেরই একটা অংশের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি বন্ধ করা হয়েছে। এর আড়ালেএক দল ফ্যাসিস্টের দোসর কাজ করছে যারা জুলাই–আগস্টের ছাত্র হত্যায় উসকানি দিয়েছে। এখানে মহিলা সমিতির সঙ্গেকোন সম্পর্ক নাই। এদের সঙ্গে কোন বিশেষ সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী কোন সম্পর্কে জড়িত না।
পহেলা বৈশাখ বিষয়ে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলারই একটা বড় উৎসব। এ উৎসব প্রত্যেকবার যেভাবে উদযাপিতহয়, এবারো সেভাবে হবে।
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চিত্রগুলো মাঠ পর্যায়ে প্রচারের কোন নির্দেশনা জেলা প্রশাসকদের দেওয়া হয়েছে–কি না এপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নিয়ে অনেকগুলো ডকুমেন্টারি বানানো হয়েছে। এগুলো মাঠপর্যায়ের প্রশাসন এবং শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। এই কাজটি চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যারা বলেন, ফ্যাসিস্টরা পলায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা চলে গেছে। তাদের স্মরণকরিয়ে দিতে চাই, এই ফ্যাসিস্ট সরকার থাকা অবস্থায় কত বাউলের চুল কেটে দেওয়া হয়েছে, কত বাউল মেলা নষ্ট করাহয়েছে, কত সিনেমা হল হাসপাতাল হয়েছে ফলে এখন যে দুই একটা ঘটনা হচ্ছে, এগুলো আসলে কেউ কেউ বলতে চাচ্ছেযে দেশে সাংস্কৃতিক চর্চা বন্ধ। আমি তাদের কথা গুরুত্বে নিয়ে জানাবো, আপনারা খেয়াল করে দেখেন যে কি পরিমাণকালচারাল অনুষ্ঠান হচ্ছে।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘সমস্যা তখনও ছিল এখনও আছে। আমরা একদিনে বাংলাদেশকে বদলাতে পারবো না।আপনারা একটু খেয়াল করে দেখবেন, আমরা বাংলাদেশকে পেয়েছি প্রায় পুলিশবিহীন অবস্থায়। সেখান থেকেআইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও প্রশাসন ঠিক করা–এই সবকিছু মিলিয়ে এ পর্যায়ে আসা সহজ নয়। এর পাশাপাশি একটারাজনৈতিক ব্যাপার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ফ্যাসিস্ট হাসিনা যদি নির্বাচনের মাধ্যমে পদ ছাড়তো তাহলে দেশের এই দুর্গতিহতো না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।